বিশেষ প্রতিনিধি:(নওগাঁ)
মোঃ সারোয়ার হোসেন অপু
অনিয়ম ও দূর্নীতির আতুড়ঘরে পরিনত হয়েছে বদলগাছী উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার অফিস। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ। টাকার নেশায় এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন যে অফিসে কর্মরত প্রায় সকলের চোখের সামনেই জমি রেজিষ্ট্রেশন করতে আসা জনসাধারণের কাছে থেকে টিপ সহির নামে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। এ যেন ওপেন সিক্রেট। আর এই সিন্ডিকেটের সাথে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে সাবরেজিস্ট্রার অফিসে কর্মরত নৈশপ্রহরী উজ্জ্বল হোসেনের বিরুদ্ধে। নৈশপ্রহরী পদে চাকুরী করেও অনায়াসে দিনের বেলায় অফিস চলাকালীন সময়ে একজন কর্মকর্তার ন্যায় চেয়ারে বসে চালান এই অবৈধ সিন্ডিকেট। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ায় উপজেলা জুড়ে সচেতন মহলে চলছে নানান গুঞ্জন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, বদলগাছী উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার অফিসে দলিল সম্পাদন করতে আসা লোকজনের দীর্ঘ লাইন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দলিল সম্পাদন করতে আসা লোকজন দাড়িয়ে আছেন নৈশ্যপ্রহরী উজ্জ্বলকে ঘিরে, লক্ষ্য করলে দেখা যায় দলিল প্রতি টিপ সহি নেওয়ার আগেই চাওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা, এবং সেই টাকা দিলে তবেই দলিলে নেওয়া হচ্ছে টিপ সহি। জমি রেজিস্ট্রি সম্পাদন করতে আসা দুধকুঁড়ি গ্রামের সাইফুল ইসলামের সঙ্গে নৈশপ্রহরী উজ্জ্বলের তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে এই প্রতিবেদক জানতে চাইলে সাইফুল বলেন, টিপ সহি দেওয়ার সময় তিনি টাকা চেয়েছে আমি টাকা দিতে অস্বীকার করার কারণে কথা কাটাকাটি হয় এবং আমি বাহিরে চলে আসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, সপ্তাহে মাত্র দুই দিন সাব-রেজিস্টার বসার কারণে চাপ একটু বেশি থাকে, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নৈশপ্রহরী উজ্জ্বল মানুষকে জিম্মি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন। এবং এই টাকার ভাগ মোটামুটি অফিসে কর্মরত সকলেই পেয়ে থাকেন। এই জন্য অফিসের কেউ কোন কথা বলে না। এছাড়াও বিকেল ৫ টার পর লেট ফি নামেও টাকা নিয়ে থাকেন নৈশপ্রহরী উজ্জ্বল।
সাবরেজিস্ট্রার অফিসের নৈশপ্রহরী উজ্জ্বলের কাছে উক্ত বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যারের সাথে কথা বলেন।
বদলগাছী উপজেলার সাব-রেজিস্টার শাকিল হোসেনের সাথে অনিয়মের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিপ সহি’র নামে অতিরিক্ত কোন অর্থ আদায়ের নিয়ম নেই। যদি নৈশপ্রহরীর বিরুদ্ধে লিখিত কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একজন নৈশপ্রহরীর কাজ রাতে হলেও তিনি দিনের বেলায় অফিসে বসে ঘুষ নেয় জিজ্ঞেস করলে সাব-রেজিস্ট্রার জানান, আমাদের অফিস জনবল কম থাকায় তাকে কাজ করতে বলা হয়েছে।