লিখন সরকার।
গঙ্গাচড়া(রংপুর) প্রতিনিধি :
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বড়াইবাড়ি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহে গেলে 'মব ' সৃষ্টি করে সাংবাদিকদের হেনস্তা করা হয় এবং পরবর্তীতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহকারী প্রধান শিক্ষকের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় ১৫ দিন হাজত বাসের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাক।
গত ৪ সেপ্টেম্বর বড়াইবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের জমির মালিকানা সংক্রান্ত চলমান মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া সত্বেও, স্কুল কতৃপক্ষ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে, নালিশী জায়গায় সরকারি বরাদ্দকৃত বিল্ডিং নির্মাণ করছে বিশেষ সূত্রে জানতে পেরে গঙ্গাচড়া উপজেলায় কর্মরত, চ্যানেল এস প্রতিনিধি শফিকুজ্জামান সোহেল, বিজয় টিভি ও মুক্ত খবরের প্রতিনিধি মাসুদুর রহমান শিমু, চ্যানেল এ ওয়ান প্রতিনিধি রানু মিয়া, দৈনিক ঘোষণা পত্রিকার প্রতিনিধি আফফান আজমীর এবং দৈনিক লিখনী সংবাদ-এর প্রতিনিধি আব্দুর রাজ্জাক স্কুলে যায়।
নিয়মানুযায়ী প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে বের হয়ে আসার সময় প্রধান শিক্ষক আলমগীর জামান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক মহির উদ্দীনের ইন্ধনে সহকারী শিক্ষক খলিলুর রহমান ও ওবায়দুল্লাহর প্রত্যক্ষ নির্দেশে স্কুলের শিক্ষার্থী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাক এবং ক্যামেরাসহ অন্যান্য উপকরণ কেড়ে নিয়ে ৫ জনকেই মারধোর করা হলে সেই ঘটনায় গঙ্গাচড়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে অফিসার ইনচার্জ আল এমরান বলেন, সাংবাদিকদের মামলা নিলে স্কুলেরও মামলা নিতে হবে। গঙ্গাচড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আলী আরিফ সরকার রিজু সাংবাদিকদের বিপক্ষে মিথ্যা মামলা না নেয়ার কথা বললে অফিসার ইনচার্জ উপস্থিত সকল সাংবাদিকদের সাথেই অসৌজন্যমূলক আচরণ করলে সাংবাদিকরা তাদের দাখিলকৃত এজাহার ফেরত চান। সেই বিষয়কে কেন্দ্র করে গঙ্গাচড়ার সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজে চড়ম অসন্তোষ বিরাজ করে এবং সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৫ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের উপর হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ওসি'র বদলীর দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। পরবর্তীতে সাংবাদিরা ওসির প্রত্যাহার চেয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি বরাবর একটি স্মারকলিপি পেশ করে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ওসির পরোক্ষ সহায়তায় দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার এজাহারভূক্ত ১ নং আসামী সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাক ১০ সেপ্টেম্বর জামিন নিতে গেলে আদালত তাঁর জামিন না মন্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করলে ১৫ দিন জেল হাজতে থাকার পর ২৫ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পায় সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাক।
জেল থেকে বেরিয়ে সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি হেনস্তার স্বীকার হয়েও যতটা কষ্ট পাই নাই, তার চেয়েও বেশি কষ্ট লেগেছে ওসি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে পরোক্ষ সহযোগিতার মাধ্যমে মিথ্যা মামলা নিয়ে নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন করলেন যার জন্য আমি নিরপরাধ হওয়া স্বত্বেও কারাবরণ করতে হলো। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
গঙ্গাচড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আলী আরিফ সরকার রিজু বলেন, আমরা গঙ্গাচড়ার সাংবাদিক সমাজ হতভম্ব হয়েছি, একজন অফিসার ইনচার্জ কিভাবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কাজ করে।
সাংবাদিক হেনস্থার প্রমাণ যেমন পরিষ্কার, তেমনি সাংবাদিকদের যে অপরাধে আসামী করা হয়েছে সেই অপরাধের প্রমাণ তাঁকেও দেখাতে হবে। অন্যথায় সাংবাদিক সমাজ আইনগতভাবে এর জবাব দেবে।
গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের আহবায়ক আব্দুল আলীম প্রামাণিক বলেন , একজন সাংবাদিকের ওপর হামলার ডিজিটাল প্রমাণাদি রয়েছে, সেই মামলায় থানা পুলিশ কাউকে গ্রেফতার না করে সুকৌশলে জামিন নেয়ার সুযোগ দিলেন এটা সাংবাদিকদের সাথে ষড়যন্ত্রের সামিল।