ইস্রাফিল খান, গোপালগঞ্জ(জেলা) প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার ভূমি অফিসার মাসুম বিল্লাহ সম্প্রতি দায়িত্ব পেয়েছেন উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে। প্রশাসনিক দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে অল্প সময়েই তিনি দক্ষতা, সততা ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা দিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলো গুরুত্ব দিয়ে শুনছেন এবং তাৎক্ষণিক সমাধান করছেন। উপজেলার জটিল নামজারি মামলা নিষ্পত্তি, সরকারি জমি দখলমুক্ত করা, অনিয়ম ও দালালচক্র নির্মূলে তার কঠোর অবস্থান মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
গণশুনানিতে মানুষের দোরগোড়ায় সেবা
মাসুম বিল্লাহর বিশ্বাস, প্রশাসন মানে জনগণের সেবা। আর সেই সেবা পৌঁছে দিতে হবে মানুষের দোরগোড়ায়। সেই ভাবনা থেকেই তিনি প্রায় প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামে ছুটে যাচ্ছেন। হাটে-বাজারে বসছেন গণশুনানি, শুনছেন মানুষের কথা আর সাথেসাথে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
স্থানীয় বৃদ্ধ হাবিব মিয়া বলেন, “আগে অফিসে গিয়ে দিনের পর দিন ঘুরতে হতো, এখন মাসুম স্যার নিজেই আমাদের সমস্যার কথা শুনছেন। উনি তো আমাদের আপনজন।”
সহজ ভাষা, শৃঙ্খলায় আপসহীন
সরল-অভিভাবকসুলভ আচরণে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে আপন হয়ে উঠলেও দায়িত্ব পালনে আপসহীন। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, অনিয়ম প্রতিরোধ ও দালাল নির্মূলে তার কঠোর অবস্থান প্রশাসনের স্বচ্ছতা ফিরিয়ে এনেছে।
উন্নয়ন আর সামাজিক ইস্যুতে সরব উপস্থিতি
শুধু অফিসের চার দেয়ালে সীমাবদ্ধ নয় মাসুম বিল্লাহ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাল্যবিবাহ রোধ, স্যানিটেশন, নারী ও শিশু সুরক্ষা—সব ক্ষেত্রেই তার সরব উপস্থিতি রয়েছে। স্কুল-কলেজে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে খোলামেলা কথা বলেন, প্রয়োজনে নতুন প্রকল্পের পরামর্শ দেন।
স্কুলছাত্রী শিলা আক্তার বলেন, “স্যার স্কুলে এসে আমাদের পড়াশোনার খোঁজ নেন, সমস্যা শুনে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেন। উনি শুধু ইউএনও না, যেন আমাদের অভিভাবক।”
এক কৃষক আবুল হাওয়ালাদার বলেন, “আমাদের জমির কাগজপত্র নিয়ে সমস্যা ছিল, স্যার নিজেই অফিসে ডেকে সমাধান করে দিলেন। উনি থাকলে আর কোনো দালালের কাছে যেতে হবে না।”
স্বপ্ন: দুর্নীতিমুক্ত মডেল উপজেলা
দায়িত্বশীলতা, আন্তরিকতা আর মানবিক মূল্যবোধ—এই তিন শক্তিকে ভর করে মাসুম বিল্লাহ কোটালীপাড়াকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন একটি দুর্নীতিমুক্ত, জনবান্ধব মডেল উপজেলার। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে কোটালীপাড়া হবে দেশের অন্য উপজেলার জন্যও অনুকরণীয় উদাহরণ।