মোঃ আল আমিন ইসলাম
নীলফামারী প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন দীর্ঘ ১৮ বছর পর দেশে ফিরে নিজ জন্মভূমিতে পদার্পণের পাশাপাশি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও কারামুক্তি উপলক্ষে নীলফামারীর জলঢাকায় এক বিশাল জনসমাবেশের মধ্যদিয়ে তাকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৯ মে) বিকেলে জলঢাকা সরকারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ জনসমাবেশ ও গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এর আগে নেতাকর্মীদের খন্ড, খন্ড মিছিলে শহরের কানায় কানায় ভরে যায় মানুষ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে নীলফামারী ১ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন। এসময় তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার বৈষম্যমূলক আচরণের মাধ্যমে সাম্য কেড়ে নিয়েছে, তারা দেশের মানুষের মানবিক মর্যাদা ও অধিকার হরণ করেছে। মানুষকে সামাজিক সুবিচার থেকে বঞ্চিত করেছে। বিএনপি সহ সকল বিরোধী দলের দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলনে শত শত প্রাণের বিনিময়ে সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট সরকার কে বিদায় দিয়েছে বাংলার জনগণ। তিনি বলেছেন, আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে খুন,গুম এবং হত্যা করেছে। ২৪’র গণঅভ্যুত্থানে এদেশের নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা সরকারি বাহিনীর আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে অকাতরে জীবন দিয়েছে। তাদের আত্মাহুতির বিনিময়ে আজ বাকস্বাধীনতা এসেছে। এদেশে ১৯৭২-৭৫ সালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। সেসময় বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। তবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেন। তিনি সকল দলের সমানভাবে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠনের পর ১৯৮১ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া নীলফামারী জেলাসহ দেশের প্রতিটি উপজেলায় ঘুরে ঘুরে বিএনপিকে সুসংগঠিত করেছেন। তিনি দেশের জনগণের কথা চিন্তা করে নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছেন কিন্তু কখনো আপোষ করেননি। তিনি আরো বলেন, এদেশের জনগণের সাথে তারা বারে বারে প্রতারণা করেছে। আর আজকে তারা বিএনপির নামে বদনাম রটছে। তবে আমাদেরকে সাবধান হতে হবে। তিনি বলেন, আমি দেশে আসার পর প্রকৌশলী মহলের সাথে কথা বলেছি। তারা নীলফামারী জেলায় কাজ করতে আগ্রহী।এই এলাকার তথ্যপ্রযুক্তি এক্সপার্টদের নিয়ে কাজ করবো। মানবসম্পদ উন্নয়নে কাজ করতে চাই। আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য- নীলফামারীকে নিরক্ষর মুক্ত করা। প্রত্যেক পরিবার থেকে অন্তত একজন যেন স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে পারে, আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবো। বেআইনি কাজ করা যাবেনা। মাদকমুক্ত এলাকা গড়তে হবে। এই এলাকার হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান-সবাই আমরা ভাই-ভাই। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে মাত্র চারবছর দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। সেসময় দেশের কল্যাণে করা তার সকল কাজের জন্য তিনি মরে গিয়েও দেশবাসীর কাছে অমর হয়ে রয়েছেন। এরপর বেগম খালেদা জিয়া দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন। কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। দেশের জনগণের কথা চিন্তা করে কখনো দেশ ছেড়ে যাননি। তার পুত্র তারেক রহমান নির্বাসনে গেলেও তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছিলোই। তিনি ভাইকে হারিয়েছেন, মাকে জেলে যেতে হয়েছিল, তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। তার নেতৃত্বে বিএনপি আজও সুসংগঠিত রয়েছে। উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কাজী দিলদার রহমানের সভাপতিত্বে এসময় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আ.খ.ম আলমগীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, ডিমলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ মানোয়ার হোসেন, জলঢাকা
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি রশিদুল ইসলাম বাঙ্গালি, সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার ভুট্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম আউয়াল বিএসসি ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক শাহজাহান কবির লেলিন প্রমুখ। সমাবেশ স্থলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে জনসমুদ্রে পরিণত হয়।