ইমাম হাসান জুয়েল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ :
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে ঐতিহাসিক ১১ মে ‘কোরআন দিবস’ উপলক্ষে ছাত্রগণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (১১ মে) রোববার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর পার্কে এ গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল আজিজ এবং সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি ইউসুফ আল গালিব।
গণজমায়েতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল ইসলাম বুলবুল। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “সেদিন কোরআনের মর্যাদা রক্ষায় ছাত্র ও জনতা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিল। স্বৈরাচার এরশাদ সরকার সে সময় প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে খুশি করতে গিয়ে কোরআনপ্রেমিক জনতার ওপর দমননীতি চালিয়েছিল। যারা পরে ক্ষমতায় এসেছে, তারাও একই নীতিতে চলেছে। ১৭ বছর ধরে ইসলামী ছাত্রশিবির কোনো কর্মসূচি পালন করতে না পারায় নতুন প্রজন্ম তাদের সম্পর্কে অনেক কিছুই জানে না। তাই তাদের কোরআন দিবসের ইতিহাস ও গুরুত্ব জানানো জরুরি।” তিনি আরও বলেন, “কোরআনের গভীর জ্ঞান অর্জন ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের কোনো বিকল্প নেই। বৈষম্যহীন, নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে কোরআনের শাসনই একমাত্র পথ।”
প্রধান বক্তা হিসেবে নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, “পবিত্র কোরআনের অবমাননার প্রতিবাদে ছাত্র, শ্রমিক ও সাধারণ জনতা জীবন দিয়েছেন। যারা কোরআনের আলো নিভিয়ে দিতে চেয়েছিল, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকেই ধ্বংস করেছেন। কোরআনের একটি অক্ষরও পৃথিবীর কোনো শক্তি পরিবর্তন করতে পারবে না। কলকাতার আদালতে কোরআন বাজেয়াপ্তের সিদ্ধান্তের সময় স্বৈরাচার এরশাদ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। কোরআন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও সেটিকে নিঃশেষ করা যায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “যারা এক সময় কোরআনের আয়াতকে বিশৃঙ্খলাকারী বলে বাজেয়াপ্ত করেছিল, পরে তারাই সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে। কোরআন বিজ্ঞানে পরিপূর্ণ, এতে রয়েছে অসংখ্য নিদর্শন। ইসলামী ছাত্রশিবির কখনো অর্থলুট, ধর্ষণ বা অপরাধে লিপ্ত নয়; বরং তারা কেবল কোরআনের দিকেই ছাত্রসমাজের প্রতি আহ্বান জানায়।”
তিনি বলেন, “দেশের অনেক আলেম-ওলামাকে শুধু কোরআনের কথা বলার অপরাধে নির্যাতন করা হয়েছে। এদেশের ২৪০ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে, অথচ যুবশক্তিকে সম্পদে পরিণত না করে সন্ত্রাসের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। কতটা অপকর্ম করলে একটি সরকারের প্রধান ব্যক্তি থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাদের পালাতে হয়! ভবিষ্যতেও যদি কোনো শক্তি ফ্যাসিবাদী ও দুর্নীতিবাজ হয়, তাদের পরিণতিও ভয়াবহ হবে।” তিনি কোরআনের দাওয়াত নিয়ে নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান এবং বলেন, “কোরআনের বিপক্ষে কোনো আইন, নীতিমালা বা বক্তব্যের সুযোগ নতুন বাংলাদেশে আর থাকবে না।”
গণজমায়েতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী মহানগর আমীর ড. কেরামত আলী, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ফাউন্ডেশন সম্পাদক আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মাওলানা আবু জর গিফারী, জেলা নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক লতিফুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দিক, সাবেক জেলা আমীর নজরুল ইসলাম এবং জেলা পূর্ব ছাত্রশিবিরের সভাপতি সালাহউদ্দিন সোহাগ ও পশ্চিম সভাপতি বায়জিদ বোস্তামি।