লেখকঃ সহকারী শিক্ষক, মোঃ গোলাম সরোয়ার!!
‘শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড’ এই কথাটি আমাদের অতি পরিচিত এবং এই উক্তিটির যথার্থতা আমরা চাইলেই অনুধাবন করতে পারি। কোনো একটি জাতির উন্নয়ন-উৎকর্ষের একমাত্র অস্ত্র হচ্ছে শিক্ষা। এযাবৎকালে আমরা যত উন্নত জাতি দেখতে পাই, সবাই শিক্ষায় এগিয়ে রয়েছে। যেহেতু পৃথিবীর প্রতিটি বিষয়-বস্তু প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল, সেহেতু শিক্ষাক্ষেত্রে পরিবর্তন নিয়ে আসা সময়ের দাবি। আরেকটু ভালোভাবে বললে, শিক্ষাক্ষেত্রে আধুনিকায়ন অতীব জরুরি। এই আধুনিকায়ন আসতে হবে একেবারে গোড়া থেকে। প্রাইমারি লেভেল থেকে শুরু করে উচ্চতর পর্যায় পর্যন্ত। শিক্ষাক্ষেত্রে আধুনিকায়নে যুক্ত হতে পারে- পাঠদানের পদ্ধতিগত পরিবর্তন, সময়োপোযোগী শিক্ষা কারিকুলাম, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত শিক্ষক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন। এ ছাড়া চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই যুগে, শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে একীভূতকরণও এর অন্তর্ভুক্ত- বিশেষ করে ইন্টারনেটের ব্যবহারের মাধ্যমে স্মার্ট উপায়ে পাঠদান, ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণের ব্যবহার নিশ্চিতকরণ।
প্রযুক্তির ব্যবহারে শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও কার্যকর এবং আকর্ষণীয় করা সম্ভব। বিশেষ করে, অনলাইন কোর্স, ডিজিটাল রিসোর্স, এবং ই-লার্নিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এখন ঘরে বসেই অনেক কিছু শিখতে পারছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI), মেশিন লার্নিং (ML), এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তির মতো উদ্ভাবনী ক্ষেত্রগুলোতে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। এছাড়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রযুক্তি কোম্পানির পার্টনারশিপ করে বাস্তবমুখী প্রশিক্ষণও চালু করা যেতে পারে।
প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলে এখনো মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং কম্পিউটার ল্যাবের অভাব বিদ্যমান। আধুনিক শিক্ষাদানে দক্ষ জনবলের কারণে ছাত্রছাত্রীরা আধুনিক শিক্ষালাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপরোক্ত সমস্যাসমূহের সমাধান হলে শিক্ষার্থীরা দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হতে পারবে।
আমরা যদি চলমান শিক্ষাব্যবস্থায় ওই পরিবর্তনগুলো নিয়ে আসতে পারি, তাহলে আগামী দিনের প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক গৌরবের সঙ্গে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যেতে সমর্থ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
মোঃ গোলাম সরোয়ার
সহকারী শিক্ষক (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
দক্ষিণ খাওক্ষীর মেহেদীয়া দাখিল মাদ্রাসা
নলছিটি,ঝালকাঠি।